SLST মামলায় বড় ধাক্কা ওয়েটিং লিস্টের প্রার্থীদের! সুপ্রিম কোর্টে মামলা খারিজ, নতুন শিক্ষক নিয়োগের পথ মসৃণ!

শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে দীর্ঘদিনের আইনি লড়াইয়ের অবসান ঘটিয়ে অবশেষে এল সুপ্রিম কোর্টের চূড়ান্ত রায়। রাজ্যের দ্বিতীয় SLST বা স্টেট লেভেল সিলেকশন টেস্ট সংক্রান্ত মামলাটি সরাসরি খারিজ করে দিল দেশের সর্বোচ্চ আদালত। এই রায়ের ফলে ২০১৬ সালের ওয়েটিং লিস্টে থাকা প্রার্থীদের নতুন নিয়োগে অংশগ্রহণের দাবি খারিজ হয়ে গেল, যা তাঁদের জন্য একটি বড় ধাক্কা। তবে রাজ্যের হাজার হাজার নতুন চাকরিপ্রার্থীর জন্য এটি একটি বিরাট সুখবর, কারণ এর ফলে নতুন শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ার সামনে আর কোনো আইনি বাধা রইল না।

সুপ্রিম কোর্টের এই সিদ্ধান্তে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায়ই বহাল থাকল। এর ফলে রাজ্যের স্কুল সার্ভিস কমিশনের (SSC) নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করার পথ সম্পূর্ণ পরিষ্কার হয়ে গেল। এখন শুধু নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের অপেক্ষা।

মূল বিষয়গুলির রূপরেখা (Outline of Main Points):

  • বড় রায়: সুপ্রিম কোর্ট দ্বিতীয় SLST সংক্রান্ত মামলাটি খারিজ (Dismissed) করে দিয়েছে।
  • কারা হেরে গেল: 2016 সালের ওয়েটিং লিস্টে থাকা যে প্রার্থীরা নতুন নিয়োগে সুযোগ চেয়েছিলেন, তাঁদের আবেদন খারিজ হলো।
  • বয়সের ছাড়: শুধুমাত্র বিশেষভাবে সক্ষম (Specially Abled) এবং Untainted প্রার্থীরাই বয়সের ছাড় পাবেন, সকলে নয়।
  • অভিজ্ঞতার নম্বর: শিক্ষকতার অভিজ্ঞতার জন্য অতিরিক্ত 10 নম্বর দেওয়ার নিয়মে আদালত হস্তক্ষেপ করেনি।
  • নতুন নিয়োগ: রাজ্যের নতুন শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া 2025 সালের নিয়মাবলী মেনেই হবে, এতে আর কোনো বাধা রইল না।

 

মামলার প্রেক্ষাপট: কারা গিয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে?

এই মামলাটির সূচনা করেছিলেন 2016 সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ার ওয়েটিং লিস্টে থাকা একদল চাকরিপ্রার্থী। তাঁদের পক্ষে সওয়াল করেন আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য। শুনানিতে তিনি জানান, আবেদনকারীরা 2016 সালের চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত প্রার্থী নন, বরং তাঁরা ওয়েটিং লিস্টে ছিলেন। তাঁদের মূল দাবি ছিল, যেহেতু দীর্ঘদিন ধরে নতুন নিয়োগ হয়নি, তাই আসন্ন শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় তাঁদের সুযোগ দেওয়া হোক। মূলত বয়সের ছাড় এবং অন্যান্য কিছু সুবিধা চেয়েই তাঁরা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন।

সুপ্রিম কোর্টের কড়া পর্যবেক্ষণ ও রায়

দেশের সর্বোচ্চ আদালত সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পর এই মামলায় হস্তক্ষেপ করতে সরাসরি অস্বীকার করে এবং মামলাটি খারিজ করে দেয়। আদালত কয়েকটি বিষয় অত্যন্ত স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে:

  1. মামলা খারিজ: আদালত জানায়, এই মামলায় হস্তক্ষেপ করার মতো কোনো উপযুক্ত কারণ খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাই আবেদনটি খারিজ করা হলো। ডিসপ্লে বোর্ডেও মামলার স্ট্যাটাস “Dismissed” দেখানো হয়।
  2. বয়সের ছাড়ের বিষয়টি: আদালত স্পষ্ট করে যে, বয়সের ছাড়ের সুবিধা 2016 সালের ওয়েটিং লিস্টে থাকা সমস্ত প্রার্থী পাবেন না। এই সুবিধা শুধুমাত্র “বিশেষভাবে সক্ষম” এবং “Untainted” (যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ নেই) প্রার্থীদের জন্যই সীমাবদ্ধ থাকবে। যাদের বয়স ইতিমধ্যেই পেরিয়ে গেছে এবং তাঁরা এই দুটি শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত নন, তাঁরা নতুন নিয়োগে বয়সের ছাড় পাবেন না।
  3. অভিজ্ঞতার জন্য 10 নম্বর: নতুন নিয়োগের নিয়মে শিক্ষকতার অভিজ্ঞতার জন্য যে অতিরিক্ত 10 নম্বর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে, সেই বিষয়ে আদালত কোনো মন্তব্য করতে চায়নি। আদালতের মতে, এটি একটি চূড়ান্ত নিয়ম এবং এতে হস্তক্ষেপের কোনো প্রশ্নই ওঠে না।
  4. নতুন শূন্যপদ: আদালত আরও জানায় যে, স্কুল সার্ভিস কমিশন (SSC) যদি নতুন শূন্যপদ তৈরি বা যুক্ত করতে চায়, তবে তাতে আদালত কোনো বাধা দেবে না। এই ক্ষমতা সম্পূর্ণভাবে কমিশনের হাতেই থাকবে।

এই রায়ের প্রভাব কী? চাকরিপ্রার্থীদের জন্য সুখবর?

সুপ্রিম কোর্টের এই চূড়ান্ত রায়ের ফলে রাজ্যের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে যে দীর্ঘদিনের অচলাবস্থা চলছিল, তার অবসান ঘটলো। এই রায়ের প্রভাবগুলি হলো:

  • SSC-এর সামনে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে আর কোনো আইনি বাধা রইল না।
  • নিয়োগ প্রক্রিয়াটি 2025 সালের নতুন নিয়মাবলী অনুসারেই সম্পন্ন হবে।
  • শিক্ষকতার অভিজ্ঞতার জন্য 10 নম্বর দেওয়ার নিয়মটি বহাল থাকছে।

এই রায় নিঃসন্দেহে রাজ্যের লক্ষ লক্ষ নতুন চাকরিপ্রার্থীর জন্য একটি বড় আশার আলো। এখন শুধু অপেক্ষা স্কুল সার্ভিস কমিশনের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের।

Leave a Comment

error: Content is protected !!